শিরোনাম
বিভাগীয় সরকারি গনগ্রন্থাগার, রাজশাহীতে ৫ ফেব্রুয়ারিতে ‘জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস’ ২০২২ উদযাপিত
বিস্তারিত
আজ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখ রোজ শনিবার সকাল ১০.৩০ মিনিটে বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার, রাজশাহী প্রাঙ্গণে জেলা প্রশাসক, রাজশাহী জনাব আব্দুল জলিল মহোদয় বেলুন উড়ানোর মধ্যে দিয়ে দিবসটির উদ্বোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের প্রধানগণ, বেসরকারি গণগ্রন্থাগার প্রতিনিধিগণ, স্কুল-কলেজের গ্রন্থাগারিক ও শিক্ষকগণ এবং সুধীজন।
দিবসটির উদ্বোধন শেষে বিভাগীয় সরকারি গনগ্রন্থাগার, রাজশাহীর নিজস্ব পাঠকক্ষে দিবসকেন্দ্রীক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন জেলা প্রশাসক মহোদয়। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রফেসর জনাব ড. পার্থ বিপ্লব রায়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জনাব জয়া মারিয়া পেরেরা। এছাড়াও বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতি (ল্যাব) এর রাজশাহী বিভাগীয় কাউন্সিলর জনাব মো: আব্দুল্লা্হ আল বশির, বাংলাদেশ বেসরকারি গণগ্রন্থাগার পরিষদের রাজশাহী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জনাব মো: জুলফিকার হায়দার ও রাজশাহী কলেজের লাইব্রেরিয়ান জনাব মুহাম্মদ মহিউদ্দিন।
জনাব মো: মাসুদ রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় বক্তারা গ্রন্থ, গ্রন্থাগার ও সৃষ্টিশীল জ্ঞানচর্চার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বক্তৃতা প্রদান করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন আমরা আমাদেরকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের আসল কাজটি করছিনা। আমরা কি করলে নিজেদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে তৈরী করতে পারবো সেটি আমরা ভাবছিনা। শুধমাত্র পড়া ও জ্ঞান অর্জনই আমাদেরকে সঠিক পথে রাখতে পারে। সময় এসেছে আমাদের আশেপাশের সকলকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার। সরকারের গৃহীত ডিজিটাল গ্রন্থাগার গড়ে তোলার অঙ্গীকারকে সাধুবাদ জানান।
প্রধান আলোচক তাঁর বক্তব্যে বলেন বই ও গ্রন্থাগার আমাদের একটি চিরায়ত ঐতিহ্য ছিলো এক সময় যেটি কালের বিবর্তনে ক্রমশই কমে যাচ্ছে। আমাদের মনিষীদের যে বিখ্যাত লেখা রয়েছে সেগুলো আমরা কতটুকু ধারণ করতে পারছি, সেগুলো আমরা কতটুক আমাদের জীবনে প্রয়োগ করতে পারছি। তিনি জানান গ্রন্থাগারে আমাদের সাহিত্যচর্চার প্রতি আরো বেশী জোর দিতে হবে।
বিশেষে অতিথি তাঁর বক্তব্যে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসের সুন্দর আলোচনা সভার ভূয়ষী প্রসংশা করে বলেন আমাদের জীবনে বই ও গ্রন্থাগারের ভুূমিকা অপরিশীম। তিনি দিবসের সর্বাত্মক সফলতা কামনা করে সকলকে গ্রন্থাগারমুখী হবার জন্য আহবান জানান।
এছাড়াও বিশেষ বক্তা জনাব মো: আব্দুল্লাহ আল বশির তাঁর বক্তব্যে গ্রন্থাগার এর ইতিহাস, গ্রন্থাগার দিবসের ইতিহাস ও যুগে যুগে গ্রন্থাগারের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি আরো বলেন বই এর দোকানিরা যেন তাঁদের দোকানের নামে গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরি শব্দটি ব্যবহার না করে। ডিসি মহোদয়কে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহবান জানান। বিশেষ বক্তা জনাব জুলফিকার হায়দার তাঁর বক্তব্যে বলেন সমাজে আজকে তরুণদের অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ বই থেকে তাঁদের বিচ্যুতি। সমাজের সকলকে সঠিকপথে রাখতে বই ও গ্রন্থাগারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আরেক বিশেষ বক্তা জনাব মুহাম্মদ মহিউদ্দিন তাঁর বক্তব্যে বলেন আমরা গ্রন্থাগার পেশাজীবীকে প্রথমে পেশাগতভাবে আরো বেশী পেশাদারিত্ব দেখাতে হবে। আমাদের নিজেদের সেবা প্রদানের আরো বেশী মনোযোগী হতে হবে।
সভাপতি তাঁর স্বাগত বক্তব্যে ডিজিটাল গ্রন্থাগার বিনির্মাণের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রত্যায় ব্যক্ত করেন। প্রকল্প শেষ হওয়ার সাথে সাথেই ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পরিবর্তিত পাঠক চাহিদার প্রেক্ষিতে অংশগ্রহণমূলক নতুন সেবা প্রবর্তন ও বিভিন্নমুখী গ্রন্থাগার সেবা প্রচলন করার কথা জানান এবং জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস ২০২২ কে সফল করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আলোচনা সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।